মাথা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
মাথা ব্যথা এই সমস্যায় ভোগেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিভিন্ন কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে। মাথা ব্যথার বিভিন্ন কারণ ও তার প্রতিকার নিয়ে আমরা আর্টিকেলটিতে আলোচনা করেছি।
মাথা ব্যাথা একটি বড় ধরনের সমস্যা আপনি যদি মাথা ব্যথার কারণ না জানেন তাহলে বিভিন্ন সমস্যায় জড়িয়ে পড়তে পারেন তাই মাথা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
মাথা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
মাথা ব্যথা বা ঘাড়ে ব্যথা আমাদের কাছে মাথা যন্ত্রণা বা মাথা ব্যথা নামে পরিচিত। মাথা ব্যথা মাথার বিভিন্ন অংশে হয়ে থাকে মাথা ব্যথার মূল কারণ হচ্ছে ধূমপান, মদ্যপান, মাদকাসক্তি, অনিদ্রা, অতিরিক্ত ঘুম, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা টেনশন করা, অতিরিক্ত পরিশ্রম করা, অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা, মানসিক চাপ ইত্যাদি মাথা ব্যথা হওয়ার কারণ।
মাথা ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকলেও মাথা ব্যথা দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি হচ্ছে টেনশন হেডেক আর অন্যটি মাইগ্রেন। টেনশন হেডেক মাথা ব্যথা ৭০ শতাংশ মানুষের হয়ে থাকে এবং মাইগ্রেন ১০ শতাংশ মানুষের হয়ে থাকে।
টেনশন হেডেক মাথা ব্যথা মাথার পিছন দিক হয় ঘাড়ের সামনে উপরে ব্যথা হয়, মাথার এক অংশ ভারি হয়ে যায় তারপরে মাথা ব্যথা শুরু হয় কাঁধ, গলা এবং মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া এই সমস্যার অন্যতম লক্ষণ। টেনশন হেডেক মাথা ব্যথার লক্ষণগুলো হলো।
- পুরো মাথাব্যথা হওয়া অথবা মাথার যেকোনো এক পাশ ব্যথা হওয়া।
- মাথার যেকোনো এক পাশ চেপে ধরে আছে এরকম অনুভব হওয়া।
- মাথার এক পাশ এ ব্যথা শুরু হয়ে পুরো মাথা ব্যথা হওয়া, অথবা কপাল চোখ ব্যথা হতে পারে।
- দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ অথবা পেশাগত কারণে টেনশন হেডেক ব্যথা হয়ে থাকে।
- টেনশন হেডেক মাথাব্যথা কয়েক ঘন্টা অথবা কয়েক মিনিট থাকতে পারে।
- মাইগ্রেনের মত তীব্র ব্যথা হয় না টেনশন হেডেক মাথাব্যথায়।
মাইগ্রেন একটি অদ্ভুত রোগ, মাইগ্রেন রোগ আক্রান্ত হলে যন্ত্রণার শেষ থাকে না। মাইগ্রেন ব্যথা মাথার এক অংশে শুরু হয়ে পুরো মাথা ব্যথা করে এমনকি চোখ কপাল ঘাড় পর্যন্ত ব্যথা শুরু হয়। মাইগ্রেন ব্যথা এক অংশ থেকে অনেক অংশে ছড়িয়ে পড়ে। মাইগ্রেন রোগে আক্রান্ত হয় খুবই কম মানুষ প্রায় ১০ শতাংশ, মাইগ্রেন রোগের লক্ষণ গুলো চলুন জেনে নি।
- মাইগ্রেন মাথা ব্যথা ৪ ঘন্টা থেকে ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।
- মাথার যে কোন পাশে ব্যথা হতে পারে।
- আলো অথবা শব্দে মাথার যন্ত্রণা আরও বেড়ে যাওয়া।
- মাথা ব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব হওয়া অথবা বমি হতে পারে।
- মাথা ব্যাথার শুরুর দিকে চোখের সামনে বিভিন্ন ধরনের আলোক ঝলকানি দেখা দিতে পারে।
- মাথার দুই পাশে রক্তনালি টনটনে হয়ে থাকা।
মাথা ব্যাথা হলে করণীয় কি
বিভিন্ন কারণে মাথাব্যথা হতে পারে, জীবনে কখনো মাথা ব্যথায় ভোগেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। মাথা ব্যথার কারণ গুলোর মধ্যে বেশি উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দুশ্চিন্তা, মাইগ্রেন, অতিরিক্ত ধূমপান, বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খাওয়া, ঘুমের ওষুধ খেয়ে অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে থাকা, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না খাওয়া এছাড়াও বিভিন্ন কারণ থাকে।
মাথাব্যথায় অনেকে ভুগলেও, মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই ওষুধ খেয়ে থাকে, তবে ওষুধ খাওয়ার আগে কিছু নিয়মের জীবন যাপন ও ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলে মাথা ব্যথা থেকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি পাওয়া যায়।
আপনাদের জেনে রাখা ভালো মাথা ব্যথা রোগটি কখনোই ভালো করা সম্ভব না কারণ এটি আমাদের চলাফেরার জীবন যাপন এর কারণে হয়ে থাকে তাই আমাদের জীবন যাপনে কিছু পরিবর্তন অথবা কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে মাথাব্যথার মত যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারি।
- অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করলে রুমের লাইট বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে, ঘুম না আসলেও চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকতে হবে।
- অতিরিক্ত শব্দের কারণে মাথা ব্যথা হয়ে থাকে, তাই অনেক লোকজনের মাঝে থাকা যাবে না এমনকি গান-বাজনা থেকে দূরে নীরব জায়গায় থাকতে হবে।
- অতিরিক্ত গরমের কারণে মাথা ব্যথা শুরু হয় অতিরিক্ত মাথাব্যথা হলে ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে হবে ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে মাথা ব্যথা অনেকটাই কমে যায় গোসলের পরে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকতে হবে।
- অনেক মাথা ব্যথা করলে মাথায় ঠান্ডা পানি ঢালতে পারেন অথবা বরফ দিতে পারেন বরফের পানি মাথাতে দিলে দ্রুত মাথাব্যথা কমে যায়।
- এছাড়া চুল শক্ত করে বাধার কারণে মেয়েদের মাথা ব্যথা হয়ে থাকে, তাই চুল শক্ত করে না বেঁধে খুলে রাখুন অথবা আগলিয়ে বেঁধে রাখুন।
- দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল কম্পিউটার ব্যবহার করার কারণে মাথা ব্যথা অথবা মাথা ভারী হয়ে যায়, মোবাইল কম্পিউটার এর স্ক্রিনের আলোর সামনে থাকার কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে।
- অতিরিক্ত আলোর মধ্যে থাকার কারণে মাথাব্যথা সৃষ্টি হয় রুমের মধ্যে হালকা আলো দিয়ে রাখুন, লাইটিং আলো থেকে দূরে থাকুন রুমের মধ্যে লাইটিং আলো থাকলে কিংবা অতিরিক্ত আলো থাকলে আলোগুলো নিভিয়ে হালকা আলো দিয়ে রাখুন।
- চুইংগাম খাওয়ার ফলে মাথাব্যথা হয়, অনেকক্ষণ ধরে চুইংগাম চিবানোর কারণে মাথা ব্যথা হয়ে থাকে।
- এছাড়া বিভিন্ন ধরনের রাস্তার খাবার খাওয়ার কারণে মাথাব্যথা হয়, তাছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না খাওয়ার কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে দিনে অন্তত ২ লিটার পানি খেতে হবে।
- এছাড়াও মাথা ব্যথা করলে কপাল ঘাড় এবং মাথা ম্যাসাজ করে নিতে পারেন।
মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ
মাথাব্যথা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যে সমস্যায় প্রায় প্রতিটি মানুষ ভুগছে। তবে মাথা ব্যথা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, আপনার প্রতিদিন মাথা ব্যথা হচ্ছে কিন্তু আপনি মাথাব্যথা কে এড়িয়ে চলছেন এটি কিন্তু গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। আপনার মাথা ব্যথার লক্ষণ গুলি উপর বিশ্লেষণ করে ডাক্তার আপনাকে সঠিক চিকিৎসা দিবে অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
যদিও মাথাব্যথা স্বাস্থ্যগত এবং সঠিক ভাবে চলাফেরা না করার কারণে হয়ে থাকে, তবে এর মধ্যেও কিছু গুরুতর প্রাণঘাতী কারণ থাকতে পারে, তবে বেশিরভাগ মাথা ব্যথা প্রাণঘাতী হয় না, কিন্তু অতিরিক্ত মাথা ব্যথার কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে যেমন ধরেন সাইনাস, কোনকশন,স্ট্রোক এবং ব্রেন টিউমার হতে পারে।
মাথা ব্যাথার ঔষধ
মাথা ব্যথা নিয়ে আমরা অনেকে ভুগে থাকি তার মধ্যে মাইগ্রেন মাথা ব্যথা আমাদেরকে সব থেকে বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলে, তাই শুধুমাত্র মাইগ্রেন মাথা ব্যথার জন্য ব্যবহৃত হয় Elipran 20mg Tablet শুধুমাত্র মাথা ব্যথা আগে থেকে শুরু হয়েছে সেই ধরনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। Elipran 20 mg tablet মাথা ব্যথা কে আটকায় না বা আটকানো মাথায় থাকে নির্মূল করে না।
এই ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে দুর্বলতা, ক্লান্তি,পেট খারাপ, মুখ শুকিয়ে যাওয়া এ সমস্যাগুলো হতে পারে। এছাড়াও আমাদের বিভিন্ন কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে, বিভিন্ন কারণে মাথাব্যথা হলে আমরা যে ওষুধগুলো খেতে পারি সেগুলো হচ্ছে।
- Napa Extra.
- Ace plus.
- Reset plus.
- Cafedon.
- Cafenol.
- Caffo.
- Fap plus.
আর্টিকেলটি পড়ে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ঘন ঘন মাথা ব্যথা আমাদের জন্য কতটা দুশ্চিন্তার ও ভয়ানক কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মাথা ব্যথা একটি মারাত্মক রোগ নিশ্চয়ই আপনি তার একটি সুন্দর ধারণা পেয়েছেন আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে মাথা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন।
Motivational Spech কে আপনার অনুভূতি জানান
comment url